শহীদ আকবর আলীর জীবনী

শহীদ আকবর আলীর জন্ম ১৯১৭ সালে ঠাকুরগাঁও জেলার বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার ৮নং বড়বাড়ী ইউনিয়নের বড়বাড়ী গ্রামে। বাবা মো. হাজী নসর উদ্দীন এবং মা মোছা. কুড়ানী বিবি। পাঁচ (৫) ভাই-বোনের মধ্যে তিনি দ্বিতীয়। গ্রামেই তাঁর শৈশব কাটে। পড়াশুনা শুরু করেন তাঁর পিতার স্থাপিত বড়বাড়ী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। ছেলেবেলা থেকেই তাঁর মনে দেশাত্ববোধ জন্ম নেয়। পিতার সেই দেশপ্রেম সঞ্চারিত হয় সন্তানদের মাঝেও। পিতার আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে সন্তানরাও মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। তাঁর প্রথম ছেলে আলহাজ্ব মো. দবিরুল ইসলাম, দ্বিতীয় ছেলে আলহাজ্ব মোহাম্মদ আলী, তৃতীয় ছেলে মো. কামরুজ্জামান ও জামাতা আলিম উদ্দীন মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয় ভাবে অংশগ্রহণ করেছিলেন। শহীদ আকবর আলী তেভাগা আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন । ব্যাক্তিজীবনে তিনি বাম রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলেন।
মুক্তিযুদ্ধের সেই ভয়াল দিনগুলিতে পাক হানাদার বাহিনী তাকে, তাঁর এক ছেলে এবং জামাতাকে ধরে নিয়ে যায়। অমানুসিক অত্যাচার করার পর ছেলে এবং জামাতাকে ছেড়ে দিলেও পাক হানাদার বাহিনী শহীদ আকবর আলীকে ছেড়ে দেয় নি। আজ পর্যন্ত তাঁর লাশের সন্ধান পাওয়া যায় নি।
অবশেষে দেশের স্বাধীনতার জন্য দেশপ্রেমিক এই মানুষটি তাঁর জীবন উৎসর্গ করেন এবং রেখে যান স্ত্রী মোছা. লতিফুন নেছা এবং পাঁচ ছেলে ও তিন মেয়েকে ? তাঁর প্রথম ছেলে আলহাজ্ব মো. দবিরুল ইসলাম বর্তমানে ঠাকুরগাঁও-২ আসনের সংসদ সদস্য এবং গণপূর্ত ও গৃহায়ণ মন্ত্রনালয়ের স্থায়ী কমিটির সভাপতি। তিনি ঠাকুরগাঁও জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতির দায়িত্বও পালন করছেন। দ্বিতীয় ছেলে আলহাজ্ব মোহাম্মদ আলী বর্তমানে বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও সাবেক উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এবং ১৯৭১ সালে তিনি ঠাকুরগাঁও মহকুমা স্বাধীনতা ছাত্রসংগ্রাম পরিষদের আহবায়ক ছিলেন। তৃতীয় ছেলে মো. কামরুজ্জামান বর্তমানে একজন বিশিষ্ট ব্যবসায়ী। চতুর্থ ছেলে আলহাজ্ব মো. সফিকুল ইসলাম বর্তমানে বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামেলীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি। পঞ্চম ছেলে মো. আজহারুল ইসলাম পেশায় একজন প্রকৌশলী, লেখাপড়ার পর তিনি চেক রিপাবলিক এ বসবাস করছেন।
মুক্তিযুদ্ধে নিখোঁজ এই মানুষটিকে স্বরণীয় করে রাখতে তাঁর দ্বিতীয় ছেলে আলহাজ্ব মোহাম্মদ আলী শহীদ আকবর আলী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি কলেজ প্রতিষ্ঠা করেন। বর্তমানে কলেজেটিতে তিনটি বিষয়ে স্নাতক কোর্স চালু করা হয়েছে।